পড়াশোনা শেষ করে কওমী শিক্ষার্থীরা কি করবে?

0
1046
 শাহ্ আশরাফ আহমেদ রাজেন |  শুক্রবার, মে ২৮, ২০২১ |  ১:০৮পূর্বাহ্ণ

দেশে যেভাবে কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা বাড়ছে, তা কি আনন্দের নাকি আতংকের ! এখানে পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষার্থীরা কি করবে। জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা, গবেষণা, উদ্ভাবনের কথা বাদ দিলাম। প্রচলিত রাষ্ট্র ব্যবস্থা, বিশ্ব ব্যবস্থায় এদের কর্মসংস্থানের সুযোগ কোথায়! পর্যাপ্ত কর্মক্ষেত্র আছে কি?

যতটুকু জানাযায় এসব মাদ্রাসায় নেই বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যবস্থা। ইংরেজি, বাংলা,গনিত উপরের শ্রেনী গুলোতে নেই! কারিগরি জ্ঞান অর্জনের ব্যবস্থাও নেই।

এখন হয়ত প্রশ্ন জাগবে বিয়ে, জানাযা, ধর্মীয় বিষয়ে আলেম ছাড়া সম্ভব কিনা। এক্ষেত্রে বলা যায় ধর্মীয় শিক্ষিত মানুষের প্রয়োজন রয়েছে, সেক্ষেত্রে কয়েক হাজারে এক জন হলেও চলে।
কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী এসব মাদ্রাসায় পড়ছে! এদের ভবিষ্যৎ কি এদের নেই কারিগরি জ্ঞান, প্রচলিত সমাজ ও বিশ্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে এদের নেই মৌলিক ধারণা। এরা দেশ জাতির সম্পদ হচ্ছে নাকি বোঝা হচ্ছে ভাবুন!

অন্যদিকে জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা করে অনেক জাতি এগিয়ে চলছে, বিশ্বে জনসংখ্যায় ক্ষুদ্র জাতিসত্তা হওয়ার পরও ইহুদিরা এগিয়ে যাচ্ছে জ্যামিতিক গতিতে, সমগ্র বিশ্ব নিয়ন্ত্রণেও তাদের পথ চলা নিরন্তর বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

সারা বিশ্বে মুসলিম জনসংখ্যা ১৯০ কোটি, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যা ৭৮০ কোটি-এর ২৪ শতাংশ।

এদের মধ্যে এ যাবতকাল বিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছে মাত্র ৩ জন।
এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানে ৬০৯ টি নোবেল পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়েছে।

সেই হিসেবে শতকরা মুসলিম বিজ্ঞানীদের নোবেল পুরষ্কার অর্জনের সংখ্যা দাড়ায় মাত্র ৩÷৬০৯= ০.৫০ শতাংশ।

সারা বিশ্বে হিন্দু জনসংখ্যা ১২০ কোটি, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ।
এদের মধ্যে কতজন এ যাবতকাল বিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছে মাত্র ৫ জন (ভারতীয় বংশোদ্ভূত দুই জনকে ধরে)। সেই হিসেবে এই সংখ্যা দাড়ায়
৫÷৬০৯=০.৮০ শতাংশ।

এবার ইহুদিদের দিকে নজর দেয়া যাক। সারা বিশ্বে মোট ইহুদিদের সংখ্যা মাত্র ১ কোটি ৪৭ লক্ষ। এদের ভিতরে বিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন ১৫০ জন। যা বিজ্ঞানে ঘোষিত নোবেল প্রাইজের ১৫০÷৬০৯=২৫%!

সত্যই অচিন্তনীয় ব্যপার এত ক্ষুদ্র জনসংখ্যার ভিতরে এত গুলো নোবেল বিজয়ী!
ফোবস সাময়িকী এর সমীক্ষায় দেখা গেছে জাপানীদের ‘আই কিউ’ সবচেয়ে বেশী, ইসরায়েলের স্থান ২য়।

ইহুদিরা ১ম বিশ্ব যুদ্ধে তাদের আবিষ্কার দিয়ে জয়ী শক্তির পাশে ছিলো। আদায় করে নিয়েছে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের মোড় পরিবর্তন কারী ঘটনা জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক এটম বোমা নিক্ষেপ। এটম বোমা আবিষ্কারের সাথে জড়িয়ে আছে ইহুদি বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের নাম।

ধর্মীয় জাতি হিসেবে মুসলমানদের এসব অবৈজ্ঞানিক, অলীক শিক্ষা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে কওমী মাদ্রাসায় বিজ্ঞান শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারিগরি জ্ঞান অর্জনের ব্যবস্থা করতে হবে। দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরিতে দেশাত্মবোধ জাগ্রত করতে হবে। দেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিষয়াবলী পড়াতে হবে। প্রত্যহ জাতীয় সংগীত পরিবেশন, জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হবে।

লেখক: শিক্ষানবিশ আইনজীবী
সাবেক শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
razenshah.cu91@gmail.com

উত্তর দিন

Please enter your comment!
Please enter your name here