বৃষ্টি হলেও কমছে না তাপমাত্রা ও মেঘনার লবণাক্ততা। নতুন করে যুক্ত হয়েছে নদীর প্রবেশমুখে ডুবোচর। ইলিশের গতিপথে ও বিচরণে এসব বিষয় বাধার কারণ বলে মনে করছেন গবেষকরা।
ফলে ভরা মৌসুমেও শিলছে না সেই কাঙ্ক্ষিত ইলিশ।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান জানান, এখন ইলিশ কম পাওয়া গেলেও যে কোনো অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ের সময় ঝাঁকের ইলিশ ধরা পড়ার সম্ভাবনা আছে। পানির চাপ বাড়লে সাগর থেকে ঝাঁকের ইলিশ উপকূলে চলে আসে। গেল বছর ইলিশের ডিম ছাড়ার সময় ছিল ৬ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন। এ বছর ইলিশের পেটে এখনো তেমন ডিম দেখা যাচ্ছে না। ফলে এবার ডিম ছাড়ার সময় অক্টোবরের শেষ দিকে শুরু হবে এমনটা মনে করছেন ইনস্টিটিউটের গবেষকরা। ইলিশ সাগরের নোনা পানিতে বড় হলেও ডিম ছাড়ার জন্য মেঘনা নদীর মিঠা পানিতে চলে আসে।
ইলিশা মাছঘাটসহ কয়েকটি ঘাটে কাঙ্খিত ইলিশ না পাওয়ার কথা জানান জেলে ও আড়তদাররা। ইলিশ মাছের জন্য ২০০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে ব্যবসায়ীদের। মৌসুমে জেলেদের জালে কাঙ্খিত ইলিশ ধরা না পড়ায় হতাশ তারা।
ইলিশ ব্যবসায়ী আব্দুল হাই জানান, নদীতে তাদের পরিবারের বিনিয়োগ রয়েছে ১০ কোটি টাকার ওপর। ভরা মৌসুমে ইলিশের আকাল থাকায় তারা হতাশ।
এদিকে দেড় মাস পরে শুরু হবে ইলিশের ভরা প্রজনন ও ছাড়ার মৌসুম। ওই সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকবে বলে জানান মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাতউল্লাহ।
মৎস্য অফিস ও মাছ ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, ৭০টি মাছঘাটে ৮০০ আড়ৎ রয়েছে। এসব আড়তের অধীনে রয়েছেন ১ লাখ ৭০ হাজার জেলে। ইলিশের জন্য ৩ হাজার ব্যবসায়ীর বিনিয়োগ রয়েছে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা। ওই টাকা জেলেদের জাল ও নৌকা মেরামত এবং কেনার জন্য অগ্রিম দেওয়া হয়।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তার তথ্যে জেলায় এ বছর ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন। দেশে ইলিশ উৎপাদন ও আহরণের ৩৭ ভাগ আসে ভোলা থেকে।
জেলেরা ও আড়তদাররা জানান, নদীতে বা সাগরে ইলিশ ধরা পড়লে ভোলার সব ব্যবসায় কেনাবেচা বাড়ে। কিন্তু মৌসুমে ইলিশের আকাল থাকায় ব্যবসায়ও মন্দা চলছে।